যদি সঞ্জিবনীর সন্ধান মেলে

লুৎফুন্নাহার মাহমুদ ঐশ্বর্য

পৃথিবী নামক প্রদর্শনীর এই বাজারে,

যখন বাহ্যিকতায় নয়ন জুড়াতে মেতেছে সকলে,

মিথ্যা, ভণ্ডামোতে পূর্ণ জীবনের ব্যক্তিগত বিষয় থেকে শুরু করে-

অস্তিত্ব ছাড়া বিষয়কেও প্রদর্শনে ব্যস্ত হয়েছে কৃত্রিম সমাজে,

তখন এক নিছক অদর্শনীয় জীব থমকে দিল জীবন যাত্রাকে!

অন্যায়ের বিচারের প্রদর্শনী নেই যে ধরণীতে,

খুন, গুমে শাস্তির প্রদর্শনী হয় কালে ভদ্রে,

ধর্ষককে খোঁজার দর্শনীয় পদক্ষেপ নেই যে ভূ-পৃষ্ঠে,

সেই মর্তে আজ অন্যায় যে করেছে, আর যে সহেছে দু’ই আত্মগোপনে!

এ কি মিরাক্কেল খেলা! খিল দিয়েছে রাঘব বোয়ালেরা! নিছক এক জীবের ভয়ে।

তবু মানুষ বেঁচে আছে আশাতে, মহামারী আর দুর্ভিক্ষে-

একদিন পৃথিবীটা ধ্বংস হলে, চাঁদে গিয়ে বাড়ি বানাবে!

ষোলকলা পূর্ণে, চাল চুরি আর ত্রানের টাকা মেরে পকেট ভারি করছে।

চাঁদে! সেখানে আর এসব গরিব জাতিকে নিতে হবেনা টেনে,

তাই শেষ কালে এরা এখানেই পচে মরুক না নাখেয়ে!

সেখানে রাজ রানীর পরিবার থাকবে!

“ভিআইপি” হাস্পাতালের চিকিৎসায় অমরত্ব পাওয়া রোগি থাকবে!

ব্যাপার স্যাপারই আলাদা, শুধু টাকা আলাদের মেলা!

একবার যদি কোনোমতে পকেট ভরে নেওয়া যায়,

তবে জীবনের বাকিটা সময় চাঁদেই কিনা হয়!

আর যদি “ভিআইপি” চিকিৎসার পরও আচমকা মৃত্যু আসে,

এই যেমন অসাবধানে কোনো ফাঁক-ফোকোর দিয়ে,

তবে জান্নাতে গিয়ে এক টুকরো জমি যে কিনতে হবে!

উপরি পরিমাণ মত না দিতে পারলে, জান্নাতের “ভিআইপি” জমি যদি না মেলে!

তাই ধ্যান, জ্ঞান, বিবেক সকল বিসর্জন দিয়ে সম্পদের নীড় গড়ছে।

কবে তবে জ্ঞান হবে মানবে, মৃতের সংখ্যা ঠিক কত তে গড়ালে,

কাজল কালো ঐ আধাঁর ঘরে শুভ্র অবয়ব পরিধেয়  নিজের আগামী দেখবে!

আর কত লাশ বিনা-জানাজায় দাফন হলে, সুবোধ যাগ্রত হবে-

এ যুদ্ধ নয় মানবে মানবে, যুদ্ধ অদৃশ্য জীবের সাথে, ভয়াবহতা এবার বহুগুণে!

লড়তে হবে একত্রে, শুধু নিজে না বেঁচে, বাঁচাতে হবে অপরকে।

সৃষ্টি কর্তা যদি না’ই থাকেন ত্রিভুবনে,

কে দিয়েছে এমন দাঁত ভাঙ্গা উত্তর তবে?

“অসহায়” বলতে শুধু দিনমজুররে,”অসহায়” আজ সবচেয়ে শক্তিধর কর্ণধারেরাও হয়েছে,

কে দেখিয়েছে তবে, দর্শনীয় ক্ষমতা আর প্রাচুর্যের উর্ধ্বে,

দৃষ্টি সীমার অগোচরে, আরও বহু লীলা খেলা ঘটে!

ঢাল তলোয়ার ছাড়া, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বিনা এ যুদ্ধে-

প্রতিরক্ষাবাহিনী, “অ্যান্টিবডি” গঠন করতে হবে খাঁচার ভেতরের লোহিত সাগরে।

অদৃশ্য এ সেনাবাহিনী লয়ে, বাঁচার সঞ্জিবনীর সন্ধান মেলার আশ্বাসে ,

অদৃশ্য করোনার সাথে লড়তে করুণা চাই অদৃশ্য রবের কাছে!

আত্মার ভেতরে যে বিধাতার বাস তাকে দেখাতে হবে ভক্তিভরে –

মানবে প্রীতি আছে, সঙ্গতি আছে, সততা আছে,

একা নয়, একত্রে বাঁচার তাগিদ আছে, ত্যাগ আছে,

মানবিকতা আছে, জীবনের প্রতি জীবনের মায়া আছে।

প্রদর্শনীর বাজারে প্রণয়গীত প্রদর্শনী এবার সৃষ্টি কর্তার তরে!

দেখাতে হবে,পৃথিবীতে বাঁচার যোগ্যতা মানবের আছে!

তবু যদি এ যাত্রায় প্রাণ-সঞ্চারকারিণী অনুগ্রহ করেন, যদি সঞ্জিবনীর সন্ধান মেলে!

যদি একটু ঠায় হয় এই সুন্দরতম ধরণীর স্নেহ ভরা বুকে!