(কবিতা) লাল একটি ঘৃণার রঙ


সবাই বলে লাল নাকি প্রেমের রঙ। তবে আমি শুধু দেখেছি  লাল রঙের তিব্র ঘৃণা! আমার বাবার চোখে। যখন মায়ের শাড়ি পরার অপরাধে  আমার চৌদ্দ বছরের ছোট্ট ভাইটিকে তিনি অমানুষিকভাবে মারতেন। আর বাবার হাতে দিনের পর দিন মার খেতে থাকা আমার ছোট্ট ভাইয়ের অপমানে লাল হয়ে যাওয়া মুখে দেখেছি তিব্র ঘৃনা। বাবার প্রতি, নাকি সমাজের প্রতি, তা কে জানে! লাল রঙে প্রেম তো দেখিনি। তবে মায়ের রান্নায় লবন কম হওয়ায় মাকে বাবার হাতে বেল্টের মার খেতে দেখেছি। মা লজ্জা-অপমানে আমাদের বলেছে, “তোরা এ ঘর থেকে যা!” মায়ের কান্নায় লাল হয়ে যাওয়া মুখে দেখেছি বাবার প্রতি তিব্র ঘৃনার আগুন। মায়ের মৃত্যুর পরদিনই বাবা যখন বিয়ে করে আনলেন পনেরো বছরের একটি কিশোরী  মেয়েকে,তখন প্রতিবেশীদের টিটকারিতে আমাদের মুখ লজ্জায়-ঘৃণায় লাল হয়ে যেত। এরপর একরাতে, বাবা যখন তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে মারতে মারতে আধমরা করে ফেললেন তখন বাধ্য হয়ে আমি লোকটাকে কষে একটা থাপ্পড় দিয়েছিলাম! সেদিন তার চোখ দুটো রাগে-ঘৃণায় লাল হয়ে গিয়েছিলো। তবে সেদিন সেই চোখে ঘৃনা আর রাগের সাথে কিছুটা ভয়ও কি মিশে ছিলো না? হয়তো ছিলো। কারণ সেদিনের পর লোকটা আর আমাদের কারো গায়ে হাত তোলেনি।